Search This Blog

Sunday, May 11, 2014

একটি কবিতার জন্ম ও মৃত্যু
অবিন সেন

মাঝে মাঝে কবিতা আসে না! যেটা আসে সেটা কিছু শব্দের কলকাকলি। যেমন শুরু করা যাক একটা লাইন পুঁজিবাদকে আমি ঘৃণা করি । তার পর দীর্ঘ অপেক্ষা এবং আরো দীর্ঘ অপেক্ষা, তার পরেও কোন সম্যক লাইন মাথার মধ্যে মাড়ি বেদনার মতো চঞ্চল বেদনার উদ্রেক করে না তথাপি ওই একটি মাত্র লাইন হাতে নিয়েই আমাকে বসে থাকতে হয়। হয়ত একবার বাজারে ঘুরে আসি, টয়লেটে যাই কিন্তু মাথার ভিতর সেই একটি মাত্র লাইন খেলা করে। এবং বার বার দ্বিতীয় লাইনের জন্য ক্লান্তি অনুভব করে। এই ভাবে কবিতার সঙ্গে ক্রমাগত আমার প্রতারণা চলতে থাকে। কারণ আমার সমস্ত কবিতাই আত্মজৈবনিক...নিজের সঙ্গে প্রতারণা ভিন্ন আমার কোনো কবিতা জন্ম উপলব্ধি হয় না। এই ভাবে পরস্পর প্রতারণার সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে দিন শেষ হয়ে রাত্রি আসে। ওগো আমার রাত্রিকালীন কবিতা! আমার কবিতা যেন রাত্রিবেলার কাছে দায় বদ্ধ। সমস্ত দিনের ক্ষয় যেন আমার কবিতার গায়ে রাত্রির মতো লেগে থাকে। বস্তুত ক্ষয় ও অবসাদ ধূপের ধোঁয়ার মতো সারা ঘরে ঘুরে ভেড়ায় মনে পড়ে আমার ঘরের জানালা থেকে বাতি-স্তম্ভ দেখা যায় না ....একাকী বাতি-স্তম্ভ মোড়ের মাথায় আলো বিতরণ করে, দু একটা কুকুর তাদের গায়ে হলদে আলো। পতঙ্গরা উড়ে বেড়ায়, তাদের গায়ে ফসলের গন্ধ লেগে আছে যেন, আমার চাষাবাদ মনে পড়ে। অর্থাৎ
পুঁজিবাদকে আমি ঘৃণা করি
আমার ঘরের জানালা থেকে বাতি-স্তম্ভ দেখা যায় না,
তবু তার হলুদ আলো আমি টের পাই..
টের পাইযেন বুকের উপর দিয়ে ট্রাক্টর চলে যায়,
যেন চাষাবাদের পারে মানুষ দু একটা গোলার্ধ চষে ফ্যালে
আমার নিজের ভিতরের অবসাদ মানুষের অবসাদ হয়ে আমার অন্ধকার দেওয়ালের গায়ে ছায়া বিছিয়ে রাখে। চোখের কাছে জেগে থাকে সেই সব মাঠ যেখান এখনো সাব-মার্সিবল পাম্প পৌঁছায়নি, ডিপ-টিউব ওয়েল পৌঁছায়নি, সেখানে একাকী মেঠো এক মানুষ ডোঙাতে জল সেচন করে চলে, অল্প সেই জল সরু নালা বেয়ে পৌঁছে যায় ধান ক্ষেতে, সে সবুজ ধান ক্ষেতে , না না সে জল মাঠে নয় সে জল সেই একাকী মানুষের এক জীবন থেকে আর এক জীবনে পৌঁছে যাচ্ছে, এক আকাঙ্ক্ষা থেকে আর এক আকাঙ্ক্ষার উচ্চাশায়..একদিন কি তার ফসল পোকায় কাটে ? পোকা ও দালাল, তারা চুরি করে ফসল...চুরি করে ফসলের ঘর..অবসাদে ধসে যায় বালি...!! সেই একাকী মানুষটির কাছে পুঁজিবাদ মানে কি ? যৌনতা..ফসল ? সে কি রোজ সোনালী ফসলের লোভ কাঁধে নিয়ে ঘুমাতে যায় ? নাকি কবিতার ভিতর যে আমি ঢুকে বসে থাকি সেই আমি ও অলীক তার কাঁধে হাত রাখি, হাত রাখি বাতি-স্তম্ভের অল্প হলুদ আলোর মতো?
পুঁজিবাদকে আমি ঘৃণা করি
আমার ঘরের জানালা থেকে বাতি-স্তম্ভ দেখা যায় না,
তবু তার হলুদ আলো আমি টের পাই..
টের পাইযেন বুকের উপর দিয়ে ট্রাক্টর চলে যায়,
যেন চাষাবাদের পারে মানুষ দু একটা গোলার্ধ চষে ফ্যালে
চষে ফেলা মানায় কি তার ?  
তার তো ফসলের ভার কাঁধে কিংবা মাথার ভিতর অবাধ্য যৌনতা ঘুম ?
তার ঘুম পায়
ফসলের দাম পড়ে এলেবেলা পড়ে আসার মতো, বাতি-স্তম্ভের আলো
তার চোখে পড়ে না
তার ঘুম পায়
পুঁজিবাদ+যৌনতা+ঘুম

আসলে যোগফল শূন্য !