টুকি
অবিন সেন
১
সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে মনে পড়ে
কোনও ভাসমান ঘোড়সওয়ার আমার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে
চিবিয়ে নিচ্ছে দু-এক মুঠো
অন্ধকারের বিচালি
কিংবা ফুচকা ওয়ালার তেঁতুলজলের বিষাদ,
টুকরো আলোর ইনডিকেটর ও তুচ্ছ কিছু মুহূর্ত !
২
মৃতদেহ সৎকারের পরে ঘরে ফিরে
এসে আমার আর সারারাত ঘুম আসে না । আসতে পারে না? সারা গায়ে যেন তাপ লেগে থাকে, তাপ
ভীষণ তাপ । পারমিতা ঘুমিয়ে পড়েছে অনেক্ষন । ঘুমের ভিতরেই সে বলল—“টুকি!” আমি চমকে
উঠি। আমি আবার শুনতে পাচ্ছি পারমিতা খাটের নীচে থেকে ডাকছে—“টুকি!”
আমি অনবরত শুনতে পাচ্ছি টেলি
ফোনের বিপ বিপ রিংটোনের মতো পারমিতা ডেকে চলেছে “টুকি” “টুকি” ।
বাইরে এখন অনেক রাত, তথাপি
হেমন্তের শিশিরে ভিজে আসছে ছাতিমের সুবাস। অন্ধকারের ভিতর জানালা দিয়ে আবছা ছাতিম
গাছটা দেখতে পাচ্ছি।
পারমিতা পাশ ফিরে শুল এবার।
তার একটা হাত এসে পড়ল আমার গায়। আমার ডান হাতের কনুইয়ের উপর তার স্তন। যেন ছাতিমের
মাদকতায় ভণ্ডুল হয়ে সেই প্রগাঢ় স্তন আমায় উষ্ণতা দিচ্ছে অথবা দেওয়ার এক অভিলাস
অন্ধকারের ভিতর ঘোড়সওয়ার হয়ে আমার উপর বসেছে—দু পা মেলে, চার পা মেলে অদ্ভুত স্বৈরিণী।
কিন্তু “টুকি”!
বিয়ের পর প্রথমবার দীঘা গিয়ে
এমনটাই হয়ে ছিল। সারা ঘরে লুকোচুরির মতো শুধু পারমিতা হরিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গমের সময়
তার ভিতরে আমার পৌরুষের পাশবিক ভঙ্গি অথচ আমার সমস্ত সত্তা জুড়ে কেবলই মনে হয়
শূন্যের ভিতর রতিক্রিয়ার ব্যকুল শৈত্য। যেন পারমিতার আড়াল থেকে পারমিতার ছায়া
বেরিয়ে এসে আমার সঙ্গে রতিক্রিয়া করে ।
আমার ভীষণ ইচ্ছা করছিল
পারমিতার “টুকি” ডাকে একবার সাড়া দিই বা দেওয়ার ভঙ্গি আমার ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে
আমাকে চেপে ধরে আর কাঁপতে থাকে তির্ তির্ করে ঝাউ পাতার মতো । যেন নদীর দিক থেকে
বয়ে আসছে বাতাস । তার হিম ।
আমি আরো গাঢ় হয়ে পারমিতার উষ্ণতার
দিকে সরে যাই । গায়ে চাদর টেনে নিই । কিন্তু তখনো শুনতে পেলাম পারমিতা ডাকল—“টুকি”!
এ কি আমার স্বপ্ন। নাকি
স্বপ্ন ভেঙে যাবার পরের নিদারুণ বিমূর্ততা ? সেটুকু ভালো করে বোঝবার জন্যে আমি
পারমিতার দিকে আবার আড় চোখে তাকই। আর তাকাতেই কেমন যেনে ভেড়া হয়ে যাই । দেখতে পাই
পারমিতা অন্ধকারের দেওয়ালের ভিতর এক অচেনা দরজা খুলে ক্রমশ তার মধ্যে সেঁধিয়ে
যাচ্ছে । ওদিকে কি অভয়ারণ্য ?
আমি চিৎকার করে বলতে গেলুম
পাতমিতা যেওনা । যেওনা ওদিকে।
ওদিকের কোনো টেলিফোন নাম্বার
আমার জানা নেই। জানা নেই ওখানে কোনো মোবাইল সিগনাল কাজ করে কিনা !
পারমিতা খিল খিল করে হাসল ।
তার হাসির শব্দ মিলিয়ে গেলে
শুনতে পেলাম—“টুকি” ।
আমি তাকিয়ে দেখছি, পারমিতা
যে দেওয়ালের ভিতর প্রবেশ করল সেটা আসলে একটা বাড়ি । একটাই বাড়ি। গম্বুজের মতো ।
কোনো জানালা নেই। আস পাশে কোনো বাড়ি নেই । শুধু সেই একমাত্র বাড়ি । শাদা চুনকাম
করা । চারপাশে গাছপালা, যেন সদ্য বৃষ্টি ভেজার পরে ঝিল্ মিল্ করছে । আমি যত সেই
বাড়ির দিকে এগিয়ে যাই তত গাছপালা গুলো পরস্পর সরে গিয়ে আরো ঘন হয়ে দাঁড়ায় । যেন
আমার পথ আটকে রাখতে চায় । আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে তাদের সেই গমন দেখি । আর দেখতে
পাই গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে বিলাস। হাসছে । আমি তাকে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম
।
অথচ বিলাস মারা গেল গত
ভোরবেলা । এমন একা একা যে মনে হয়েছিল ভোরবেলার সমস্ত হিম যেন আত্মীয়ের মতো তার ঘরে
পা-ছড়িয়ে বসে থেকেছে । হয়ত একা একা মরাটা তার একটা বিলাসিতা ছিল । তাই কি ? হয়তবা
। আমি জ্ঞানে বা অজ্ঞানে বলাসের কোনো আত্মীয়কে দেখিনি । আদৌ কেই কোথাও ছিল কি না
কে জানে বা জানার ভঙ্গীকরে কোনোদিন তার কাঁধে হাত রাখিনি । বিলাস আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে
এসে জুটেছিল বা আমরাই তাকে জুটিয়ে নিয়ে ছিলাম । আমি ও পারমীতা । গতরাতে যখন
শিশিরের আঘাতে শিউলি ঝরছিল তখন সেই ঝরা শিউলির ভিতর—হিমের ভিতর বিলাস একা একা মরে
গেল। খোলা জানালা দিয়ে কোনো ছাতিমের সুবাস কি তার মাথার কাছে এসে বসেছিল?
এই যে এখন যেমন আমার মাথার
কাছে এক অলীক পারমিতা ক্রমাগত ডাকছে—“টুকি, টুকি, টুকি”।
শুনতে পাচ্ছি এবং বলা ভালো
দেখতেও পাচ্ছি পারমিতা এখন বসন্তের ফাগুন বউটির মতো হয়ে আছে । লজ্জাশীল-ব্রীড়ানত ।
সদ্য কনসিভ করেছে সে । ডালা ডালে তার বসন্তী ফুলের মতো সোহাগ।
আচ্ছা, পারমিতা যে কনসিভ
করেছে তা কি বিলাস জানত? কথাটা আমার হঠাৎ মনে হল । কেন?
দীর্ঘদিন আমাদের ফসলের ভূমি ছিল অকর্ষিত। ফসলের । সবুজ সিমের আকাঙ্ক্ষা
সন্তান সন্ততির হাত ধরে মাঠের আলপথ ধরে হেঁটে যাবে আর হেমন্তের বিকেলে কিংবা শিশিরের
ঘেরা টোপে নাড়ার আগুনে একটু সোহাগ ভরে নেবে চাদরের কোঁচড়ে। পারমিতার সেই সব আকাঙ্খা
ছিল। আমারও কি ছিল না ?
“সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমা
খাবো”।
কিছুক্ষণ আমার তন্দ্রার মতো
এসে গিয়েছিল। চটকা ভাঙতে দেখলাম রাস্তার পাশে সমস্ত দোকানের সাটার নামানো আর আমি
সেই শাদা রাঙের বাড়িটা খুঁজে পাচ্ছিনা । ল্যাম্পপোস্টের কাছে বিলাসের সঙ্গে দেখা।
শালা, তখনো দাঁত ক্যালাচ্ছে
।
আমাকে দেখে বলল—কি খুঁজছিস ?
-একটা শাদা বাড়ি ।
-অভয়ারণ্য?
-না, একটা শাদা বাড়ি। তার
সবকটা জানালায় জানালায় খড়খড়ি নামানো। দরজাগুলো বন্ধ।
-বেশ্যাখানা ?
-না !
- ?
-আমি কখনো বেশ্যাখানা
দেখিনি।
-যা শালা !
-কোনও দেবালয়ও দেখিনি ।
-ধুর, বোকাচো......
আমি হাসলাম । বিলাসের
মুখখানা ওলটানো ব্ল্যাক ডগের বোতলের মতো লাগছিল । ইচ্ছা হল শালার গাঁড়ে কোষে এক
লাথি দি।
কিন্তু তখনি শুনতে পেলাম—“টুকি”
। হাত বাড়াতে রক্ত মাংসের পারমিতা হাতে ঠেকল । আমার হাতের থেকে আরো দীর্ঘ এক হাত বেরিয়ে এসে পারমিতার মাংসল নিতম্ব জড়িয়ে
ধরতে চাইল। কি তীব্র উষ্ণ সে মাংস । আমি চাদর সরিয়ে উঠে এসে জানালার সমনে দাঁড়াই। বাইরে
শিশির ঝরছে । ক্রমশ সেই শব্দ আমি যেন শুনতে পাই, শুনতে পাই পাতার থেকে ঝরে পড়ছে
স্নানের পরে পারমিতার চুলের থেকে জল, শিশির। আমার খুব হস্ত-রতির ইচ্ছা জাগে । খুব
। যেন কল খুলে দিয়ে জলপাড়ার শব্দের ক্লান্তি । আমার যৌনাঙ্গের উপর দিয়ে হেঁটে চলে
যায় পারমিতার ছায়ার শরীর । হেঁটে গিয়ে সে খুলে দিচ্ছে চারপাশের সমস্ত বন্ধ
দরজাগুলি।
বিলাস সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ
করে। বিলাস ?
আমার সন্ধেহ হয় ।
৩
নিস্তব্ধতার ভিতর কয়েক যোজন
পা মেলে দিয়েছে গাছগুলি
তারা কি এগিয়ে গিয়ে শিশির
ছোঁবে ?
৪
সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি নিপুণ
হাতে এক দুর্গের দ্বার খুলে দিই । দেখি সকালের রোদে ভেসে যাওয়া বারান্দায় একটি শালিক
এসে বসেছে। গ্রিলে । আমার মুখো মুখি সে একটি হিজল গাছের ঘন পাতার মতো বসে থাকল
স্থির । আমার বড় অস্বস্তি হয় । এক শালিকে এই অস্বস্তি আমার চিরকালের । মনে হল আমার
চোখের ভিতর দিয়ে সে তাকিয়ে আমার সমস্ত অশুভ নক্ষত্রগুলিকে দেখে নিচ্ছে আর মুচকি
মুচকি হাসছে।
আমার অস্বস্তি আরো বাড়ত হয়ত—পারমিতা
এলো।
চায়ের কাপ রাখল নিচু টেবিলের
উপর ।
আমি কি পারমিতাকে শাদা বাড়ির
কথা জানতে চাইব ?
কিন্তু আমি দেখেতে পাচ্ছি পারমিতার চারিদিকে হিজল বন ছেয়ে আছে।
ছায়া দিয়ে আছে। আমার খুব ইচ্ছা করছিল আমি সেই ছায়ার নীচে দাঁড়াই। পারমিতাকে ছুঁয়ে
দাড়াই।
পারমিতার
ছায়া আড়াল করে বিলাস দাঁড়িয়ে আছে।
পারমিতার
ভিতরে বিলাসের সন্ততি ?
আমার
অসহ্যে মাথার ভিতর কুয়াশা ভণ্ডুল হয়ে থাকে।
আমি
শীতের শুকনো পাতার মতো..................................................
............................................................................................
৫
ফ্রিজ
থেকে আর একটা সিগনেচারের বোতল নিয়ে আসে পারমিতা।
বিলাস
তখন হাসছিল।
হাতের
তাস টেবিলের উপর ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হাসল। হা হা করে গলা ফাটিয়ে সে হাসল।
ধুর
বাঁড়া....তার পর জিব কাটল। সরি পার...মিতা...
তার
কথা জড়িয়ে আসছিল।
আমার
সমনে সে কখনো পারমিতাকে নাম ধরে ডাকে না। সেদিন ডাকল। আমি ছায়ার মতো অন্ধকারের
ভিতর ঢুকে যাচ্ছিলাম।
আমি
উঠে যাচ্ছিলাম। পারমিতা আমার ঘড় ধরে বসিয়ে দিল । না না...সে কি পারমিতা? আর হাত কি
অ্যাত হিম? এত কঠিন?
কিংবা
উত্তরের কঠিন হাড় হিম হাওয়া আমার ঘাড় ধরে বসিয়ে রাখে । আমি অবহেলায় দেখতে
পাচ্ছিলাম আমার অসাড় হাত একটার পর একটা সিগনেচারের পেগ তুলে নেয়। সেই পেগ ভর্তি
অজস্র হাসির খেউর। ফ্যাক্টরির চিমনি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় বিকেলে পথঘাট ঢেকে গিয়েছে।
রিক্সায় আমি আর পারমিতা ফিরছিলাম। মাথার ভিতর ডাঃ বিষ্ণু র কথাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিল
।
-না
না মি বোস..আই অ্যাম সরি, আপনার মিসের সব টেস্ট রিপোর্ট ঠিকই আছে। কিন্তু
আপনার.........
আই
মিন আপনি বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই মি: বোস....
আমার
চোখের সামনে তখন বিকেলের পথঘাট...বৃষ্টির পরে ভেজা ভেজা বাতার । কোথাও কোনো ত্বরা
নেই...কিছু বলার নেই। পারমিতার হিম হাত আমার হাতের ভিতর। তারও কিছু বলার নাই।
আমাদের বর্ষাকাল শেষ হয়ে এলো। আমাদের ফসলের আকাঙ্ক্ষা গ্রীষ্মে নদী নালা শুকিয়ে
এলে পর যেমন নিশ্চুপ তেম্নি শান্ত। পারমিতাও শান্ত। শুধু রতিক্রিয়ার সময় সে আমার
ভিতর থেকে হারিয়ে যায়...আমি তাকে খুঁজে পাই না। খুঁজে পাই না মোটে । দেবদারু অরণ্যের
ভিতর থেকে সে সাড়া দেয়....টুকি—টুকি—
৬
আমি
কখনো কোনো দেবালয় দেখিনি...
দেখিনি
কোনো বেশ্যালয়.....
৭
অফিস
থেকে ফিরে দেখেছিলাম পারমিতা ঘরে নেই।
থাকার
কথাও নয় ?
তখন
ফসলের সময়। কর্ষণের সময়।
আমি
চারিদিকে ট্রাক্টরের আওয়াজ শুনতে পারছিলাম ।
“জানালার পিছনে এখন তীব্র ট্রাক্টরের শব্দ
অনবরত....
এখন কর্ষণের সময় । ফসলের
সঙ্গে মানুষের উচ্চাশার নিবিড়তা
সমাচারের মতো সমস্ত শিরা
উপশিরা বেয়ে ছড়িয়ে পড়ছে । এখানে কথাবলা মানা ।
চলো বাইরে গিয়ে দাঁড়াই । কথা
বলি।
ঘরের বাইরে কি উচ্চকিত শব্দ
নেই ?
বাইরে ?
ঘরের থেকে বাইরে ?
নিজের ছায়ার থেকে, ছায়ার
বাইরে—
পেঁয়াজের মতো এমনি পরস্পর
খোসা ছাড়াতে ছাড়াতে
জীবনের থেকে জীবনের
পরম্পরায়....
দেখি
এক নদীতীরে দাঁড়িয়ে আছি
বাতাস নেই....ঢালু পাড়
নেই....
কেবল স্রোতে ভেসে চলে যাচ্ছে
অকারণ ছায়াগুলি”।
৮
এই ভাবে ফসলের সময় পারমিতা
সারা দুপুর বিলাসের কাছে থেকেছে । একদিন। দুইদিন....
তারপর...
পারমিতা ফিরে এলে তার চোখে মুখে
দেখেছি নদীর সরসতা । বর্ষার শেষে যেমন খাল বিলের জল আহ্লাদে স্ফুরিত তেমনি উজ্জ্বল
মেয়েটির মতো হয়ে গিয়েছে পারমিতা।
-পারমিতা...আমাদের সন্তান
যদি বিলাসের চোখ-মুখ-নাক পায়?
পারমিতার ওষ্ঠ আমার মুখ
বন্ধকরে দেয়। তার উষ্ণ শ্বাস বায়ু ভেঙে পড়ে আমার মুখে। সে হাঁপায় । তার পর ফোঁপায়
। সমস্ত ঘর আমাদের হিজলের ছায়ার মতো ভারি হয়ে আসে। আমি সেই শাদা বাড়িটা দেখতে
পাচ্ছি । কিন্তু বিস্ময়ে দেখি পারমিতা সেই বাড়ির ভিতর হারিয়ে যাচ্ছে না । না না সে
কোনো ভাবেই হারিয়ে যাচ্ছে না । শুধু একটা জানালায় বিলাসের ম্লান মুখ । সেই বাড়ির
দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে ফিরে আসছে পারমিতা। আর ফিরে এসে আমার হাত ধরেছে।
৯
-লক্ষ্মীটি বিলাস এই ওষুধ টা
খেয়ে নাও প্লিজ।
বিলাস ম্লান হাসে। নেশায়।
শালা কি সব বুঝতে পারছে? বুঝতে পারছে এ ছাড়া তার কোনো গতি নেই, উপায় নেই! না হলে অমন
ধূর্ত বেড়ালের মতো তাকিয়ে আছে কেন? আমি একটা একটা পেগ বানাই। পারমিতা একটা একটা
ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দেয়।
তারপর অনেক রাতে আমরা
অন্যমনস্কের মতো আমাদের ঘরে ফিরে আসি।
পরিপাটি হয়ে একা ঘরে ঘুমিয়ে
থাকে বিলাস ।
বস্তুত পৃথিবীতে বিলাসের মতো
একা কেউ নেই । জানালা দিয়ে আশ্চর্য এক গন্ধ সেই মাত্র আমি পাচ্ছিলাম । আমি ফিস ফিস
করে বললাম—
বিলাস ছেলেবেলার কোনো গন্ধ
পাচ্ছ ? পাচ্ছ না ? তাহলে গাড়ি কি রিক্সা বা কিছুর শব্দ ? কিংবা শব বহনের মতো গাঢ়
ভার তোমার কাঁধে ? তাও না ।
-প্লিজ বিলাস...একবার বলো—“আমার
সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে”।
প্লীজ বিলাস---
১০
চায়ের কাপ তুলে নিতে এসে
পারমিতা হই হই করে বলল—
এই এই বাজারে যাও.....ঘরে রান্নার
মতো কিছু নেই......শেষের দিকে অভিনয়ের মতো তার কি গলা ধরে এলো...??
আমি চেয়ার থেকে উঠতে গেলে
সেই শাদা বাড়ির জানালা থেকে বিলাস ডাকল—
টুকি—টুকি—
----০----